খবরের সময় ডেস্ক
ক্ষুধা চেপে রাখলে এক দিকে যেমন মন খাই খাই করবে, তাতে অনেক সময় উল্টোপাল্টা খেয়েও নেবেন। খিদে পেটে ঘুম আসবে না, মেজাজ খিটখিট করবে, ক্লান্ত লাগবে, অপুষ্টি হবে। সব মিলে ওজন যদিও বা দু-এক কেজি কমেও, চেহারায় পড়বে ক্লান্তির ছাপ। ফিটনেসে ঘাটতি হবে। অপুষ্টি ও অনিদ্রার ফলে কমতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।
আসুন জেনে নেই কোন ডায়েট ফলো করলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেবে না। ডিম খেতে ভাল লাগলে খাওয়া বন্ধ করার দরকার নেই। শুধু কুসুমটা বাদ দিয়ে দিন। আগে হয়তো একটা গোটা ডিম খেতেন, এখন ৩-৪টে ডিমের সাদা অংশও খেতে পারেন৷ সেদ্ধ করে৷
রেডমিট পছন্দ হলে ভাল করে চর্বি কাটছাট করে নিয়ে কম তেলে রান্না করুন৷ সেদ্ধ করা জলটা ফেলে দিলে চর্বি আরও কিছুটা কমবে৷ এভাবে রান্না করা মাংস সপ্তাহে এক দিন দু’টুকরো খেলে ক্ষতি নেই৷
ফল ছাড়া কোনও মিষ্টি খাবার খাবেন না৷ ফলও খুব বেশি খাওয়ার দরকার নেই৷ দিনে একটা বা দুটো গোটা ফল খেতে পারেন৷ তার মধ্যেও যেটা কম মিষ্টি সেটা বেছে নিন৷
কোনও মিষ্টি পানীয় খাবেন না৷ ফলের রসও নয়৷ এ সব খেলে পেট তো ভরেই না বরং একসঙ্গে অনেকটা ক্যালোরি ও চিনি শরীরে এসে বাড়িয়ে দেয় ভুঁড়ির আশঙ্কা।
ভাত পছন্দ হলে কষ্ট করে রুটি খাওয়ার দরকার নেই৷ বরং একমুঠো করে ভাত কমিয়ে সে জায়গায় কম ক্যালোরির সব্জি সেদ্ধ খান৷ যেমন, পটল, ভেন্ডি, উচ্ছে, বেগুন ইত্যাদি৷ কম তেলে রান্না করা এক হাতা শাক বা পাঁচমিশালি সব্জিও খেতে পারেন৷ অর্থাৎ ভাত-রুটির পরিমাণ কমিয়ে, দরকার হলে আগের অর্ধেক করে শাক-সব্জি খাওয়া দ্বিগুণ করে দিন৷ এক ধাক্কায় নয়, ধাপে ধাপে করবেন৷ না হলে পেটের গোলমাল হতে পারে৷ হতে পারে অতৃপ্তিও৷ সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস খেতে পারলে বেশি ফাইবার পাবেন, তবে তার স্বাদ ভাল না লাগলে সাদা ভাতই খান৷ সঙ্গে নানা রকম সব্জি৷
মাছ, মাংস, ডিম আগের চেয়ে একটু কম খেয়ে সে জায়গায় খান ফাইবারসমৃদ্ধ উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। যেমন, বিন, সয়াবিন, রাজমা, ছোলা, মটর, ডাল। উপকার যেমন হবে, পেটও ভরা থাকবে বেশিক্ষণ।
ময়দাজাত খাবার একেবারে বাদ দিন। এক আধবার পরোটা খেতে ইচ্ছে হলে হয় ময়দার মধ্যে সবজির পুর মেশান নয়তো আটা দিয়ে বানাতে হবে।
তেল-ঘি-মাখনের উপকার থাকলেও এ সময় যত কম খাওয়া যায় তত ভাল। তবে একেবারে বাদ দিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। ভিটামিন ডি ও ই-এর শোষণ বাড়াতে একটু তেল-ঘি এর প্রয়োজন আছে। এর পাশাপাশি সব রকম বাদাম, বীজ, অ্যাভোক্যাডো, অলিভ অয়েল, তৈলাক্ত মাছ অল্প করে খান। এতে ক্যালোরি কিছুটা বাড়লেও উপকার পাবেন প্রচুর। পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকবে৷ তৃপ্তি হবে বলে খাইখাইভাব থাকবে না।
বাজারের লো-ফ্যাট খাবার একেবারে খাবেন না। তাতে ফ্যাট কম থাকলেও চিনি থাকে প্রচুর। তাতে অপকারের পাল্লাই ভারি হয়। ওজন কমারও সুরাহা হয় না। ফাস্ট ফুড ও প্রসেস করা খাবার খাবেন না। কারণ তাতে তেল-ঘি-লবণ-মিষ্টি সবই বেশি থাকে।
টুকটাক খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে হবে৷ দিনে ৫-৬ বার খাবেন। সকালে মোটামুটি পেটভরে ব্রেকফাস্ট৷ মাঝসকালে ফল বা ঘোল কি স্যালাড৷ দুপুরে ডাল, স্যালাড, সবজির সঙ্গে অল্প ভাত বা রুটি ও মাছ/চিকেন/ডিম/দই। ডেজার্ট এখন না খাওয়াই ভাল। খুব ইচ্ছে হলে অল্প খেজুর খেতে পারেন। বিকেলে মুড়ি-বাদাম বা হালকা অন্য কিছু৷ রাতে আবার দুপুরের মতো খেয়ে আধ ঘণ্টা একটু হাঁটাহাটি করে ঘণ্টা দুয়েক পরে ঘুমোতে যাওয়া৷
খেয়াল রাখবেন, দিনের প্রতিটি খাবারে যেন প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ ঠিক থাকে। দরকার হলে পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।